বই মানুষের চিরকালীন সঙ্গী। সভ্যতার আদিম যুগে যখন মৌখিক সংস্কৃতি ছিল প্রধান, তখনও মানুষ অভিজ্ঞতা, কল্পনা ও ইতিহাস সংরক্ষণের প্রয়োজন অনুভব করেছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা লিখিত আকারে রূপ নেয় এবং বই হয়ে ওঠে জ্ঞানের আধার। আজকের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, বই প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা বহুমাত্রিক ও গভীর।
প্রথমত, বই হলো চিন্তার প্রকাশ। একজন লেখক যখন নিজের ভাবনা, অভিজ্ঞতা, কল্পনা বা গবেষণালব্ধ জ্ঞানকে সঠিকভাবে প্রকাশ করতে চান, তখন তার সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম হলো বই। এটি লেখকের পরিচিতি গড়ে তোলে এবং তাঁর চিন্তাভাবনা সমাজে ছড়িয়ে দেয়।
দ্বিতীয়ত, বই সমাজের পরিবর্তনের হাতিয়ার। ইতিহাসে বহুবার দেখা গেছে, একটি বই কীভাবে বিপ্লবের বীজ বপন করেছে। সমাজের ভুলকে তুলে ধরা, সচেতনতা সৃষ্টি করা, সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে সংরক্ষণ করা—সব কিছুতেই বইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
তৃতীয়ত, বই একজন লেখকের আস্থা ও পরিশ্রমের ফল। প্রকাশনা মানে শুধু লেখা ছাপা নয়, বরং একটি স্বীকৃতি, যা লেখককে পাঠকের সঙ্গে সংযুক্ত করে। বই লেখকের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং তাঁকে আরও সৃষ্টিশীল করে তোলে।
চতুর্থত, বই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সম্পদ। প্রযুক্তির যুগে ই-বুক বা অডিওবুক জনপ্রিয় হলেও মুদ্রিত বইয়ের আবেদন অমলিন। এটি তথ্য সংরক্ষণের বিশ্বস্ত মাধ্যম এবং পাঠককে মনোযোগী পাঠ অভ্যাসে সহায়তা করে।
সর্বোপরি, বই প্রকাশ মানে একটি স্বপ্নের বাস্তব রূপ। এটি শুধু লেখকের জন্য নয়, পাঠক, সমাজ ও সংস্কৃতির জন্যও এক অমূল্য অর্জন। তাই বই প্রকাশ আজও প্রয়োজনীয়, সময়োপযোগী ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।